বিশেষ সংবাদদাতা: নগরীর সনাতন পাল লেন এলাকায় মামলাধীন জমিতে সড়কের একেবারে গা ঘেঁষে একটি বহুতল ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। ভবনটির নির্মাণ করছেন বাবুল হোসেন নামে এক ব্যক্তি। বহুতল ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই সিটি পাইলিংয়ের কাজ চলছে যা শেষ পর্যায়ে বলে জানা যায়। অথচ এই ভবনটি নির্মাণের কাজ শুরুর আগে নিয়ম অনুযায়ী রাজউক বা সিটি কর্পোরেশনের কাছ থেকে নকশা বা কোন অনুমোদন নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, যে জমিতে ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে সে জমির বিষয়ে বাটোয়ারা মামলা চলমান রয়েছে। বাবুল হোসেনের এমন কাজে স্থানীয়দের অভিযোগ, আদালতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে এবং আদালতের রায়ের অপেক্ষা না করেই ভবন নির্মাণের চেষ্টা করছেন তিনি।
বলাই বাহুল্য, বাবুল হোসেন একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। তিনি একা নন, তার মতো আরও অনেক প্রভাবশালী রয়েছেন এই নগরে। কিন্তু এই প্রভাবশালীদের কেউই নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছেন না। রাজউক বা নাসিক থেকে কোন অনুমোদন না নিয়েই শত শত ভবন নির্মাণ হচ্ছে নগরীতে। ফলে এ নগরীকে পরিকল্পিতভাবে সাজানো যাচ্ছে না এবং বাড়ছে ভবন সাধারণ জনগনের ভোগান্তি।
সনাতন পাল লেন এলাকায় গিয়ে কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে। তারা অভিযোগ করেন, আমাদের এ মহল্লার চলাচলের সড়কটি অনেক সরু। আর তাই সিটি কর্পোরেশন থেকে এ এলাকায় ৫ শতাংশ এর কম জমিতে ভবন নির্মাণের কোন অনুমতি দেয়া হয় না। তবে বাবুল প্রভাবশালী হওয়ায় সিটি কর্পোরেশনের এ নিয়মনীতি কে তোয়াক্কা না করে বাবুল হোসেন একেবারে রাস্তার গা ঘেঁষে ভবন নির্মাণের লক্ষ্যে পাইলিংয়ের কাজ করছে। ফলে নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত রড ও রডের পাইলিং সহ অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী সড়কটিতে রাখায় আমাদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। একইসাথে ভবিষ্যতে এ সড়কটি আরো বেশী সরু হয়ে জনগনের চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়বে বলে তারা অভিযোগ করেন। পাশাপাশি এ ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তথা নাসিক ও রাজউক এ দুটি সরকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে প্রতিকার চায় এবং দ্রুত এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ জমির পাশের আরেক জমির মালিক বলেন, বাবুলরা অনেক প্রভাবশালী তাই মহল্লার কেউ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলে না। এখানে দুই শতাংশ জমির উপর ভবন নির্মাণ না করার বিষয়ে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক বাধা দেয়া হলেও বাবুলরা কারো কথা না শুনে ভবন নির্মাণের চেষ্টা করছে।
আরেক বাসিন্দা বলেন, বাবুলের খুটির জোর কোথায় তা খুঁজে বের করা দরকার। কেননা তারা সরকারী প্রতিষ্ঠানের নিয়মনীতি না মেনে ভবন নির্মাণের চেষ্টা করছে, ফলে জনগনের চলাচলে এখন সমস্যা হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে। বিল্ডিং কোড বা আইনের কোনো ধরনের তোয়াক্কা না করে অনেকটা গায়ের জোরেই ভবনটি নির্মাণের চেষ্টা করছেন বাবুল হোসেন এমনই অভিযোগ করেন তিনি। তাই অতি শীঘ্রই তার খুটির জোর খুঁজে বের করতে হবে বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে জমি ও নির্মাণাধীণ ভবনের মালিক বাবুল হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নিয়ম না মেনে ভবন নির্মাণের প্রশ্নই উঠে না। আমি রাজউকের কাছ থেকে অনুমতিপত্র নিয়েই কাজ করেছি। প্রয়োজনে আপনি দেখতে পারেন।
তবে তার এ কথা মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে রাজউক কর্তৃপক্ষের ওই কাজ পরিদর্শনের সময়। বুধবার (১৩ নভেম্বর) দুপুরে অনুমোদন না থাকায় ওই ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে রাজউক কর্তৃপক্ষ। তারা এ অবৈধভাবে ভবন নির্মাণ করার অভিযোগে ভবন মালিক বাবুল হোসেনকে কারন দর্শানোর নোটিশও দিয়েছেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানাগেছে।
0 Comments